Breaking News

বাইশের বন্যা । ডাকাতের রাত । পর্ব - ০৯ । লিখা- তাসরিফ খান



আমি হতভম্ব হয়ে গেলাম । প্রচণ্ড বুক কাঁপছে আমার । ডানে-বামে তাকিয়ে দেখি চারপাশটা ঘুটঘুটে অন্ধকার। মাঝিকে ডেকে বললাম, মামা পেছনে টর্চ জ্বালান। টর্চের আলোয় দেখলাম মাঝবয়সী অনেক লোক ট্রলারের মধ্যে বাঁশ, ধারালো দা হাতে দাঁড়িয়ে আছে। 

আমার বুঝতে বাকি রইলো না— ট্রলারগুলো যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে বড়োজোড় আর দশ মিনিট সময় লাগবে আমাদের ট্রলারটা ধরতে। আমি সেনাবাহিনীকে অনবরত ফোন করছি কিন্তু কোন নেটওয়ার্ক পাচ্ছি না। হঠাৎ মাঝি আমাদের ডেকে বললো, আপনেরা একটা পলিথিনের মধ্যে আপনেগো মোবাইল আর টাকা-পয়সা একসাথে কইরা রাইখা দেন; নাইলে আইজ আর কেউ বাঁইচা ফিরতে পারবেন না।
আমি শ্রাবনকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম,

ডাকাইত কইথ থিকা তাড়া করছে রে? নোয়াখালী বাজার থিকা ।
টের পাইছোস কেমনে? প্রথমে ফাহিম দেখছে।
কী করমু ক তো? সেনবাহিনীরে ফোন দিতাছি, ফোন তো ঢুকে না। মামা আমিও বুঝতেছি না ।
প্রিয়তকে বললাম, সবাইকে শান্ত থাকতে বল । কিছু একটা করতেছি। মাঝিকে জিজ্ঞেস করলাম, ক্যাম্পে যাইতে কতক্ষণ লাগবে কন তো? দূর আছে। চল্লিশ মিনিটের মতো লাগবো।
মামা, আরেকটু জোরে চালান ।
লাভ নাই ধইরা ফালাইবো ।
মাঝির থেকে টর্চ লাইট নিয়ে পেছনের ট্রলারগুলোর দিকে জ্বালালাম । ডাকাতদের দুইটা ট্রলার কিছুটা পিছনে, আরেকটা ট্রলার একটু কাছাকাছি। ফাহিমকে ফোনটা দিয়ে বললাম,
সেনাবাহিনীকে কল দিতে থাক। কল ধরলে আমারে দিস

নৌকায় আমার সাথে থাকা স্বেচ্ছাসেবীরা প্রত্যেকেই ভয়ে কুঁকড়ে আছে কিন্তু কেউ আমাকে কিছু বলছে না । ওরা নিজেরা নিজেরা ফিসফিস করে কথা বলছে । আমার মাথায় আর কিছু কাজ করছে না। মাঝি আমায় ডেকে আবার বললো, মামা ওরা দশ মিনিটের আগেই ধইরা ফালাইবো। আপনারা মোবাইল, টাকা-পয়সা একসাথে কইরা থুইয়া দেন। আমাগোরে ধইরা ফেলাইলে কিছু কওনের আগেই সব দিয়া দিয়েন। এরা কিন্তু অনেক মারে ।

চলবে....

কোন মন্তব্য নেই