Breaking News

গল্প : বাসর রাত

রুমের দরজাটা লাগিয়ে দিলাম । আমার বিয়ে করা বউটা বিছানায় বসে আছে । জানেনই তো আমার জন্যই অপেক্ষা করছে । তিন মাসে আগে আমদের বিয়ে ঠিক হয়েছে ।   একটা পিক এ আমার বউটাকে দেখেছিলাম ।সেই থেকে আমার  ঘুম হারাম হয়েগেছে ।কিন্তু আমারতো এখন  লজ্জা লজ্জা লাগছে । থাক বাসর রাত লজ্জা পেলে চলবে না বিড়াল মারতে হবেতো । তাই আবল তাবল না ভেবে বিছানায়উঠতে যাব তখনি......
.
-এই কি করছেনটাকি...??? ( আমার বউ )
-কেন বিছানায় উঠছি ..। (আমি হালকা ভয়
পেয়ে)
-কেন বিছানায় উঠছেন কেন??
-কেন তাহলে কি করবো ??
-কি করবেন মানে ???
-না মানে বিছানায় উঠবো না কেন ???
-না উঠতে পারবেন না ।।
-তাহলে কি করবো ???
-আমি কি জানি । জান সোফায় গিয়ে বসে
থাকেন ।
.
.
আমি উৎস ।  বিদেশ থেকে লেখাপড়া শেষ করে মাত্র তিন দিন হলো দেশে এসেছি । আর এরই মধ্যে আমার জীবনের 12টা বাজিয়ে দিল । কি আর করা বিয়েটা করতে হলো ।মেয়েটার নাম অনামিকা । কিন্তু আমি ভেবেছি ঢং কইরা অনু ডাকবো ।কিন্তু মা ভাবি মিলেকেমন বউ এনে দিল আমাকে । বিছানায়ই উঠতে দিচ্ছে না ।আমি আবার তাহসান স্টাইল তো তাই মেযেদের সাথে তেমন ইজি ফিল করতে পারি না । কিন্তু বাসর রাতে ইআমার সাথে অত্যাচার করা হচ্ছে । না এটা হবে না ....
.
-শুনো ( এটা বলতেই আমার দিকে গরম
চোখে তাকালো
তাই ভয় পেয়ে বললাম...
-না মানে শুনুন ।
-কি ....???(অনামিকা)
-দেখো তুমি না মানে আপনি আমার বিয়ে
করা বউ ।(আমি)
-সো হোয়াট...??(অনামিকা)
-না মানে একটু বিছানায় উঠি ??? এটাতো আমারও বিছানা .......ভাগ আছে ।
-ওয়েট ওয়েট আপনারও ভাগ আছে রাইট ।বাট আপনাকে বিছানায় উঠতে হলে কিছু কাজ করতে হবে । (অনামিকা)
-কাজ করতে হবে কেন ??? আচ্ছা কি কাজ ??(আমি)
-আপনাকে কিছু শাস্তি আর জরিমানা দিতে হবে ???
-অ্যাঁ .....
-হুমমমম । আপনি যদি এই গুলো সঠিক ভাবে পালন করেন তাহলেই বিছানায় উঠতে পারবেন ।
মেয়েটার কথা শুনে মাথা ঘোরাচ্ছে । কি বলে এই মেয়ে ।বাসর রাতের মত একটা রাত । স্বামীকে সালাম করে আদর করবে কিনা স্বামীর কাছ থেকে জরিমানা নিচ্ছে ।
.
-এই যে বির বির করে কি বলছেন ??
(অনামিকা)
-না কিছু না । আচ্ছা আমার সাথে তো
তোমার কোনদিন
কথাই হয় নি । তাহলে শাস্তি আর
জরিমানা কিসের ?
আমি কি করেছি ????(আমি)
-কি করেছেন শুনবেন??? (অনামিকা)
-হুমম বলো .... সরি বলুন ।(আমি)
-শুনুন আমি জীবনে কোনদিন প্রেম করিনি
। কারন আমি
আমার স্বামীর সাথে প্রেম করবো বলে ।
(অনামিকা)
-কিযে বলেন না । (আমি)
-ওই এত ঢং করতে হবে না । আপনার জন্য সেই স্বপ্ন আমার পূরন হয় নি ।
ভেবেছিলাম হবু স্বামীর সাথে বিয়ের তিন মাস আগে থেকে প্রেম করবো ।
তিন মাস আগে বিয়ে ঠিক হইছে ঠিকই আমি প্রেম করতে পারলাম না ।(অনামিকা)
-সো স্যাড ....!!!! (আমি)
-এখন আমি প্রতিশোধ তুলবো । (অনামিকা)
-কি করবেন ?? (আমি)
-তিন মাস প্রেম করতে পারি নি সে হিসাব
পরে হবে ।
তিন মাসের প্রতি সপ্তাহে 2 দিন ঘুরতাম ।সেখানে দুজনের খরচ হতো 4 হাজার এর মতো
তাহলে আমার 2 হাজার । মাসে চারস প্তাহ । তিন মাসে 12 সপ্তাহ । তাহলে আমার
24 হাজার টাকা হচ্ছে । টাকা টা নিয়ে
আসুন । (অনামিকা)
-কিহ? এখন তোমাকে এত টাকা দিতে
হবে ?? (আমি)
-রুম থেকেই বের করে দিব কিন্তু ....
(অনামিকা)
-আচ্ছা দিচ্ছি ।
.
.
কি আর করা টাকা টা দিতে হচ্ছে এখন ।
না জানি এই
আমার জীবনে কত টাকা এভাবে মেরে
দিবে ।......
.
-এই নিন টাকা । (আমি)
-পুরোটাই আছে তো ??? (অনামিকা)
-আপনি গুনে নিন । (আমি)
-থাক কম হলে পরে নিয়ে নিব । এখন
নেক্সট.....
-আবার কি....
-শুনুন প্রতি সপ্তাহে 2 দিন যে ঘুরতে
যেতাম আপনার তো গিফট দেওয়া লাগতো
সেই বাবদ 15 হাজার টাকা নিয়ে আসুন ।
-আমার কাছে তো আর নেই ।
- নেই মানে । জান বাইরে জান ।
-আচ্ছা তুমি এখন না মানে আপনি এখন
টাকা নিযে কি করবেন ??? (আমি)
-জরিমানা নিচ্ছি । বেশি কথা না বলে
জান টাকা নিয়ে আসুন ।নয়তো দুর হন
( অনামিকা)
.
হে আল্লাহ আমি কার হাতে পরলাম ।
আমার বাসর রাত কি জরিমানা দিতে
দিতেই যাবে ..............
.
কি আর করা ।আবার 15 হাজার টাকা এনে
দিলাম । ...
.
-হুম ঠিক আছে । এখন আমি যে তিন মাস প্রেম করতে পারিনি তার হিসাব হবে । (অনামিকা)
-আবার কত টাকা দিতে হবে । আমার কাছে কিন্তু আর টাকা নেই । (আমি)
-এবার টাকা দিতে হবে না । তিন মাস প্রেম করতে না পারার জন্য মাসে তো 30 দিন । তিন মাসে 90 দিন। 90 বার কানধরে উঠবস করতে হবে । (অনামিকা)
-ওয়াট । আমি উঠবস করবো ?? (আমি)
-জি হ্যাঁ ।
-ইম্পসিবল ।
-গেট আউট ।
-এতো রাতে আমি কোথায় যাব ???
-জানি না । তারাতারি রুম থেকে বের হন ।
.
.
উপায় না পেয়ে ভাবলাম শাস্তি একটু
কমিয়ে নেই ।
তাও আজকের মতো ঘুম টা অন্তত ভালো
হোক।
.
-বলছিলাম কি । আমার তো এখানে কোন
দোষ নেই ।
আমি তো দেশে ছিলাম না তাই না । তা
না হলে তো
প্রেম করতাম । তাই বলছি কি শাস্তি টা
একটু কম করা যায়
না ???? (আমি)
-আচ্ছা 80 বার ???(অনামিকা)
-না না একটা কথা বলি ..... 10 বার করি ।
-কিহ এত কম ??
-দেখো আজ অনেক টাইয়ারড । এত বার উঠবস
করলে
আমাকে আর খুজে পাওয়া যাবে না ।তাই
বলছি একটু শাস্তি টা কম করুন না ।
-ওকে 20 বার করুন ফাস্ট ।
.
ভাবলাম এবার অনেক কম হইছে । ভাগ্যের
কি করুন পরিনতি । বাসর রাতে
উঠবস করতে হচ্ছে । জানি না কি পাপ
করেছিলাম ।
.
.
এইভেবে কান ধরতে যাবো তখনি.....
-শুনুন বেলকুনিতে গিয়ে দেখে আসুন তো
চাদ উঠেছে কিনা । (অনামিকা)
.
শাস্তির ভয়ে তারাতারি দেখতে গেলাম ।
দেখি অনেক বড় চাদ উঠছে ।
বাইরে চাদের আলোতে ঝিকমিক করছে ।
আজকের চাদ টা আমার ঘরের চাদের মত এত সুন্দর নয় । যাই হোক রুমে এসে বললাম
আপনার মত একটা চাদ উঠেছে এত বড় ।
খুশি হয়ে বললো ....
-ওকে চলো ...(অনামিকা)
-কোথায় ? (আমি)
-বেলকুনিতে
.
.
যাক শাস্তি টা মাফ হয়ে গেল । আমিও
খুশি মনে বেলকুনিতে
গেলাম ।
.
তার 10 হাত দুরে দাড়িয়ে আছি ।
বেলকুনির সোফায় বসে ......
-এখানে বসুন । (অনামিকা)
.
তার থেকে দুরে সরে বসলাম ।
-একি এত দুর কেন ???(অনামিকা)
-না আপনি যদি কিছু মনে করেন ??(আমি)
-কিছু মনে করবো মানে । আমি তোমার
বোউ না বুদ্ধু ।
-হুমম ।
-কাছে আসো ।
.
কাছে গেয়ে বসলাম । অনামিকা আমার হাত ধরে বসে রইলো ।
আমি কোন কথা বলছিনা ।অনামিকা বললো কিছু বলছো না কেন ?।
আমি বললাম কি বলবো ।অনামিকা মনটা খারাপ করে আমার হাত
জরিয়ে কাধে মাথা রেখেবসে রইলো ।
কিছুক্ষন পর.....
-উৎস....(অনামিকা)
-হুমম বলো....(আমি)
-আই লাভ ইউ....
-কবে থেকে (আমি)
-তিন মাস আগে থেকে ?? (অনামিকা)
-আই লাভ ইউ ঠু ।(আমি)
.
হঠাৎ আমার ঠোটে মিষ্টি একটা নরম
ঠোটের স্পর্শ ....
নিজেকে মনে হয় হারিয়ে ফেলেছি ।
প্রকৃতির সব কিছু যেন থমকে গেছে। কিন্তু আমার মনের ভেতর ঢেউ খেলছে....মধুর সময়টা পার করার পর...অনামিকার দিকে তাকালাম...লজ্জায় আমাকে জরিয়ে ধরে আমার বুকেমুখ লুকালো ।চাদের জোছোনায় ওর মুখের একপাশ টাঝলমল করছিল ...কিছু চুল ওর চওল টা ঢেকে দিতে চাচ্ছে ...আমি চুলে হাত দিতেই ও আরো শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরলো ।আমিও ওকে পরম যত্নে আগলে রেখেছি......
.
-আমাকে এভাবেই সব সময় আগলে রাখবে তো ???(অনামিকা)
-হুম ....(আমি)
-কখনো কষ্ট দিবা না তো ??? (অনামিকা)
-তোমায় কখনোই কষ্ট দিব না ।। খুব ভালোবাসবো । (আমি)
-মাঝে মাঝে জরিমানা চাইলে দিবা
তো???(অনামিকা)
.
তখন ওর মুখটা তুলে কপালে একটা আলতো চুমু একে দিয়ে বল্লাম ...
-আচ্ছা দিব ।
-আর কখনো দুরে চলে যাবে না তো ???
(অনামিকা)
কখনও না (আমি)
আর এভাবে রাত্রি ভোর হয়ে এলো।
 
 
 

1 টি মন্তব্য: