Breaking News

বাইশের বন্যা । ডাকাতের রাত । পর্ব - ১১ । লিখা- তাসরিফ খান



বাঁশিতে ফুঁ দিবেন আর জোরে জোরে বলবেন, ‘সেনাবাহিনী সেনাবাহিনী'। আমরা আসতেছি। আপনারা বিচলিত হইয়েন না । ফোন রেখে সবাইকে বললাম, সেনাবাহিনী আসতেছে। 

পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যেই চলে আসবে। সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে রাখো ।
সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। 
আমি সবাইকে নিষেধ করলাম ডাকাতদের দিকে যেন আর লাইট না জ্বালায় । 
একটা ত্রাণের বস্তা ছিঁড়ে পানি আর বিস্কিটের প্যাকেট বের করে সবাইকে খেতে বললাম ।
সবাইকে নিয়ে বসে খাচ্ছি আর বার বার মোবাইলে সময় দেখছি। 
ইতোমধ্যে সবাই লাইফ জ্যাকেট পরে ফেলেছে। 
এক একটা মিনিট কীভাবে পার হচ্ছে তা শুধু আমি জানি আর আল্লাহ জানেন। 
বারবার মাথায় আসছে আমার জন্য যেন স্বেচ্ছাসেবকদের কোনো ক্ষতি না হয়। 
কিছুক্ষণের মধ্যেই বাঁশির শব্দ শুনে সবাই উঠে দাঁড়ালাম । 
সামনের দিক থেকে তিন-চারটা টর্চের আলো ভেসে আসছে আমাদের ট্রলারের দিকে । 

এক মুহূর্তের জন্য মনে হলো, ডাকাতদল বোধ হয় এবার সামনের দিক থেকেও আমাদের ঘিরে ফেলেছে। টর্চের আলো ক্রমশ কাছে আসছে। আমার হার্টবিট বেড়ে গেলো। 
কয়েক মুহূর্তের ব্যবধানে স্পষ্ট দেখতে পেলাম যে সামনের 
দিক থেকে সেনাবাহিনীর চারটা স্পিডবোট দুর্বার গতিতে এগিয়ে আসছে। 
সবাই খুশিতে চিৎকার করে উঠলাম । এ যেন এক মহা বিজয়ের উল্লাস! 
কিন্তু অবাক করার ব্যাপার হলো পেছনে টর্চ জ্বালিয়ে দেখি, 
এই পাঁচ-সাত মিনিটের ব্যবধানে ডাকাতদল গায়েব! পিছনে একটা ট্রলারও নেই । 
আমি স্বস্তির শ্বাস ফেললাম । বেঁচে গেছি এতেই খুশি। 

সেনাবাহিনীর স্পিডবোটগুলো আমাদের চলন্ত ট্রলারের চারিপাশে 
একবার প্রদক্ষিণ করতে করতে জিজ্ঞেস করলো, অল গুড?
আমি হাসিমুখে জানালাম, ইয়েস, অল গুড ব্রাদার । দে হ্যাভ গন । 
সালাহ উদ্দিন ভাই বললেন, সাবধানে যান তাহলে । আমরা ক্যাম্পে ফিরে যাচ্ছি।
সালাহ উদ্দিন ভাই মূলত দিরাই উপজেলার ডাকবাংলো অস্থায়ী ক্যাম্পের দায়িত্বে আছেন। 
তিনি সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন। 
কয়েকদিন আগে টুকের বাজার এলাকায় ত্রাণ দিতে গিয়ে 
তাঁর সাথে আমার বেশ সুন্দর একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। 
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তিনিই প্রথম আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।

চলবে...

কোন মন্তব্য নেই