Breaking News

বাইশের বন্যা । ডাকাতের রাত । পর্ব - ০২ । লিখা- তাসরিফ খান



শ্রাবন গিয়ে অনেকটা জোর করেই আজিজ ভাইয়ের কাঁধ থেকে বস্তাটা নিজের কাঁধে তুলে নিলো। আমি গোডাউনের ভেতরে গিয়ে দেখি ভলান্টিয়ারদের কয়েকজন ত্রাণের বস্তায় এবং দেয়ালে হেলান দিয়ে ঘুমাচ্ছে। তবে তাদের বেশিরভাগ ত্রাণ প্যাকেজিংয়ের কাজে ব্যস্ত। যারা কাজ করছে তাদের প্রত্যেকের কাপড় ঘামে ভিজে শরীরের সাথে লেগে আছে। আমি অবাক হলাম। কারণ যতদূর জানি, এই ভলান্টিয়ারদের শিফট ফজরের আগেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। পুরো প্যাকেজিংয়ের দায়িত্বে থাকা

দেলোয়ার ভাইকে আমি জিজ্ঞেস করলাম, ভাই আপনাদের কাজ কতদূর? এরা তো দেখতেছি সব মারাত্মক ক্লান্ত। এদের শিফট ভোরে শেষ হয়ে যাওয়ার কথা ছিলো না?

দেলোয়ার ভাই মৃদু হেসে বললেন, কাম তো আরো দুই ঘণ্টা আগেই শেষ ভাই । এহন আমরা কাজ আরো কিছুডা আগাইয়া রাখতাছি। সামনে তো আরো বড় চালান আইতাছে ভাবলাম এহন কাজ আগাইয়া রাখলে পরে সুবিধা হইবো ।

আরো পড়ুনঃ

আমি বললাম, মাল উঠানো-নামানোর জন্য না আজকে লেবার আসার কথা? লেবার কই? দেখলাম আজিজ ভাই কাঁধে কইরা বস্তা নিয়া যাইতাছে । আজিজ ভাইরে মানা করলেও তো শুনে না ভাই । আমাদের সাথে আইসা কাজে হাত লাগাইয়া দেয়।

আচ্ছা বুঝলাম । কিন্তু লেবার কি আসতেছে? নাকি আরো পরে আসবে? মাল তো প্রায় উঠানো হয়ে যাইতেছে ।

ভাই আপনে কিছু মনে না করলে একটা কথা কইতাম ।

বলেন ।

লেবার তো ঠিক করার আছিলো আসাদ ভাইয়ের। ভাইয়ের সাথে কথা বইলা আমরা আপনারে না জানাইয়াই সিদ্ধান্ত নিছি যে লেবারের কাজটাও আমরাই করমু । ওগোরে যে পরিমাণ টাকা দেওয়া লাগে, তা দিয়া তো আরো কয়েক বস্তা ত্রাণ দেওয়া যাইবো।

দেলোয়ার ভাইয়ের কথাগুলো শুনে আমি আসলে বুঝতে পারছিলাম না যে তাকে কী বলবো। এই মানুষগুলো এতোটা ডেডিকেটেড কী করে হতে পারে! এমনও না যে ওরা এখানে টাকার জন্য কাজ করছে এবং এক্সট্রা কাজের জন্য বেশি টাকা পাবে। দেলোয়ার ভাইকে জিজ্ঞেস করলাম, এটা একটু বেশি চাপ হয়ে যাবে না ভাই আপনাদের জন্য?

চলবে...

কোন মন্তব্য নেই