Breaking News

শাশুড়ি vs বউ । পর্ব - ০৫ এবং শেষ



সালমা রুম থেকে যাওয়ার পরে

-মারিয়া(শাশুড়ি)
-জ্বি আম্মু
-তোমার শরীরে না জ্বর?
-হ্যা
-কার সাথে যেনো কথা বলছিলে
-সালমা আসছিলো
- কাজ করার সময় কাজ করতে পারো না কথা বলার সময় তো ঠিকই কথা বলতে পারো
-আম্মু আমি ওর সাথে কয়েক ঘন্টা খানেক কথা বলিনি, শুধু ২-৩ মিনিট বলছি
-৫-১০ মিনিট টাইম দিলে তো বড় বৌ মার কাজ টা তারাতারি হবে
-মারিয়া তখন চুপ করে থাকে
-কি হলো কথা বলছো না যে?
শাশুড়ির সাথে কথা বলতে তো গাঁ জ্বলবেই,হাইয়ের সাথে আর অন্য মানুষের সাথে সারাদিন কথা বললেও কিছু হবে না।
এমন কথা শুনে মারিয়া একটা বালিশ টেনে নিজের মাথার উপরে রেখে ঘুমিয়ে যায়।
দুপুরের খাওয়ার সময়

-এই উঠো(বড় ভাবি)
-হুম ভাবি আসছি
-ফ্রেশ হয়ে খাবার টেবিলে চেয়ার টেনে বসার পরে
-লজ্জা করে না? কোন কাজ না করে এসে খাবার খেতে?
-আম্মু আমি তো অসুস্থ
-অসুস্থ হলে কি হয়ছে? মুখে অনেক রুচি আছে।
-মুখে রুচি না থাকলে কি আর প্রথম ডাকেই এসে পড়ে?(ভাবি)
-আমি না খেলেই বোধহয় আপনারা খুশি, আচ্ছা আপনারা খেয়ে নিন বলে মারিয়া ডাইনিং টেবিল ছেড়ে উঠে নিজের রুমে এসে পড়ে।
রুমে এসে সালমার দেওয়া আপেল টা হাতে নিয়ে ভাবে
-এই মেয়েটা তো আমার আপন কেউ না তারপরেও নিজের জমানো টাকা দিয়ে এসব কিনে দিয়ে গেছে আর আমার আপন মানুষরা খাবার সামনে দিয়ে খাবার কেড়ে নেয়।
আল্লাহ এর কাছে হয়তো বড় কোন অপরাধ করছিলাম আর সেটার সাজা এদিক দিয়ে পাচ্ছি।
মারিয়া নিজে নিজে এসব ভাবছে আর নিজের অজান্তেই চোখ ভিজে যাচ্ছে।
এভাবে দুইদিন যাওয়ার পর মারিয়া কিছুটা সুস্থ হয়।
সুস্থ হওয়ার কয়েকদিন পরে মারিয়া বিকালের দিকে উঠোন ঝাড়ু দিচ্ছিলো এমন সময় খেয়াল করে দেখে শুভ হাসি মুখে তার দিকে আসছে।

মারিয়া তখন হাত থেকে ঝাড়ু ফেলে দিয়ে দৌড়ে শুভর শরীরে ঝাপিয়ে পরে।
শুভ ও মারিয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে সবার সামনেই কয়েকটা চুমু দিয়ে দেয়।
শুভ মারিয়াকে ছাড়িয়ে সবাইকে ভালোমন্দ জিজ্ঞাসা করে নিজের রুমে আসে।
শুভ রুমে এসে খাটে বসার পরে মারিয়া শুভর কোলে বসে পরে
-আমি বিশ্বাস ই করতে পারছিনা
-কেনো?
-তুমি হঠাৎ এভাবে আসবা?
-সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলাম
-এমন সারপ্রাইজড আমি জীবনেও হই নাই বলে গাড় ঘুড়িয়ে শুভর চোখের দিকে তাকিয়ে শুভর ঠোটে ভালোবাসার স্পর্শ দেয়।
-মারিয়া?
-বলো না
-এসব কি?
-কোথায় কি?
-তোমার চেহারার কি অবস্থা হয়ছে?
-আরে পাগল জন্মের পর থেকেই তো ঢাকা তে আছি, সেখানকার পরিবেশের সাথে এখানকার পরিবেশ টা খাপ খায়নি তাই হয়তো একটু কালো হয়ে গেছি
-ওহহ পরিবেশের কারনে মানুষের ওজন কমে যায় সেটা জানা ছিলো না
-মারিয়া তখন চুপ করে থাকে

-কি হলো কথা বলছো না কেন?
-কিছু না, এখন ফ্রেশ হয়ে আসো
-আগে বলো এসব কিসের জন্য
-আগে তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো
-শুভ তখন ফ্রেশ হয়ে এসে মারিয়ার সাথে কথা বলছে এমন সময় মা এসে
-শুভ কিছু খেয়ে নে
-খেয়ে আসছি,এখন খাবো না
-পরে খাবো
-না এখন খাবি,বৌমা শুভকে নিয়ে আসো সাথে করে
-মারিয়া তখন শুভকে সাথে করে ডাইনিং টেবিলে বসে
-ভাবি কোথায়?
-এখানেই আসে
-ডাক দেও
-সীমার মা এদিকে আসো
-ভাবি আসার পরে
-আম্মা আমি তোমার আর ভাবির থেকে তো এসব কখনো আশা করিনি
-কি আশা করিস নাই? কিসের কথা বলছিস?
-মারিয়া এমন একটা মেয়ে যার মা বাবা কেউ নেই,ভাবছিলাম তুমি ওকে সেটার অভাব দূর করে দিবে কিন্তু তুমিও এসব কি করে পারলে?

-কি করছি?
-ওরে দিয়ে সব কাজ করাও কিন্তু খাবারের সময় ওরে ছাড়া কিভাবে একা খেয়ে ফেলো? ও কি মানুষ না? নাকি কোন পোষা প্রানি?
-কে বললো এসব কথা
-সত্য কি কখনো চাপা থাকে?
-মারিয়া অসুস্থ হয়ছে তখন কি কোন ডাক্তার দেখানো যায়নি? ডাক্তার তো ডাকোইনি এমনকি আমাকেও জানাওনি।কেনো মা এসব কেন করছো? ওরে কি নিজের ছেলের বউ মনে করো না? কোন মানুষ কাজের মেয়ের সাথেও এমন করে না আর তুমি তোমার ছেলের বউয়ের সাথে এমন ভাবে চলতেছো।
ও কি দোষ করছে বলো?
-শুভর মা চুপ করে আছে
-এই ভাবি কথা বলো না কেন?
-বাদ দেও এসব,এখন খাও
-বাদ দিবো কেন? তুমি তো ওরে আপন বোনের মতো দেখার দরকার ছিলো আর তুমি কি করলা?
-শুভর মা আর ভাবি দুজনই তখন চুপ করে থাকে।
-এই মারিয়া

-হ্যা বলো
-সাথে কি কি নিবা নিয়ে নাও
-কিহহহ?(মারিয়া)
-হ্যা যা বলছি তা করো
-কেনো?
-তুমি তো দারোয়ানের মেয়ে, সো এই বাড়ি তোমার জন্য না
-শুভ বাবা এসব কি বলছিস?
-যা বলছি তা তো শুনতেই পাচ্ছো,এই মারিয়া ব্যাগ গোছাও
-বাবা পাগলামি করিস না
-পাগলামি আমি করতাছি? নাকি তোমরা করছিলে?
-শুভ ভাই এসব করিস না
-এই তোরে বলছিনা সবকিছু গুছিয়ে নিতি
-আচ্ছা এদিকে আসো
-কোথায়
-রুমে আসো
-মারিয়া শুভকে রুমে ঢুকিয়ে দরজা লক করে শুভকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে পায়ের উপড়ে পা রেখে ঠোটে ঠোট লাগিয়ে নেয়।
শুভ ততক্ষণ চুপ হয়ে থাকে
-এখন চলো(শুভ)
-কোথায়?

-ঢাকা
-কেনো?
-ঐখানেই দুজন থাকবো
-আচ্ছা থাইকো এখন চুপ করে বিছানায় শুয়ে থাকো
-নাহ আমি পারবোনা
-আমি বুকে মাথা রাখবো তো
-শুভ তখন ও রাগে দাড়িয়ে আছে
-মারিয়া তখন শুভকে বিছানায় ধাক্কা দিয়ে বুকে মাথা রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। ২-১ মিনিট পরে শুভ ও মারিয়াকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। মারিয়া জানে শুভকে কিভাবে রাগ ভাঙ্গাতে হয়। মারিয়া শুভর কানের কাছে গিয়ে হালকা করে কামড় দিয়ে ফিসফিস করে
-ভালোবাসি
-আমিও ভালোবাসি
-হু
-খুব কষ্ট হয়ছে তাই না?
-তোমাকে কাছে না পাওয়ার কষ্ট অন্য কিছু না
-আর ওরা যে এত অত্যাচার করলো?
-একসময় তারা দুজনই বুঝে যাবে
-তাই বলে এত অত্যাচার?
-আর করবে না তো
-হু
-এএমনিতেও আমার ওখানে একা থাকতে ভাল্লাগেনা
-হু
-তোমারে লাগবেই
-মাকে সবকিছু বুঝিয়ে বলবে তাহলে মা তোমার সাথে আমাকে এমনিতে দিবে
-তুমি মানুষ নাকি অন্যকিছু
-তোমার বউ
-হুমম আমার লক্ষী শুধু আমার বলে শুভ মারিয়াকে শক্ত করে বুকের সাথে মিশিয়ে ফেলে, মারিয়া ও কম কিসে? মারিয়া শক্ত করে জড়িয়ে ধরে চুমু দিতে দিতে বুক ভরিয়ে দিচ্ছে।
ভালো থাকুক তাদের এমন পবিত্র ভালোবাসা

আল্লাহ হাফেজ

কোন মন্তব্য নেই