Breaking News

এই মুহূর্তে নয়ন আর হৃদয় দু'জন টং দোকানে বসে কথা বলছে.....

আচ্ছা হৃদয়,তুই এতো'টা বোকা কেন?কবে
চালাক হবি..?!(নয়ন)
--নয়ননননন(বিরক্ত ভাবে) উফফ...থামতো এবার!চুপ
কর! এখন যা মনে হচ্ছে তোকে কথাগুলো বলাই
আমার উচিত হয়নি।(হৃদয়)
--সে'টা কি করে হবে?বন্ধুরা কোনো পরামর্শ
দিলে সেটা তো তোর কাছে ভাষণ মনে হয়।
(নয়ন রেগে কথাটা বলল)
.
-- কি 'রে তোদের দুই'জনের হঠাৎ করে আবার
কি হলো??এভাবে গরুর মতো চিল্লাচিল্লি
করছিস কেন??...(ওপাশ থেকে আবির )
.
"আর বলিসনা রে দোস্ত"
(আবিরের কাছে গিয়ে বসতে বসতে নয়ন বললো
..)"নতুন করে আর হবেই বা কি??জানিসই তো
আমাদের মহারাজের (হৃদয়ের) দয়ার শরীর। সবার
সব ধরনের সাহায্য -সহযোগীতা করার
গুরুদায়িত্বটা যেন উপর'ওয়ালা ওনার'ই ঘাড়ের
উপর দিয়েছেন...তাই'তো সব'বারের মতো
এবারো একটা পূণ্যের কাজ করে এসেছেন
সে....শুধুই কি পূন্যের কাজ??বিরাট বড় পূণ্যের
কাজ।"
--ওই বেটা নয়নননন....তুই থামবি????তোকে না
নিষেধ করছি এরকম করে কথা বলতে??(হৃদয়)
.
--এরকম'করে নয়তো কি'রকম করে কথা বলবো হ্যা?
তোর মতো একটা বোকা টাইপের ছেলে যে
কি করে আমার ফ্রেন্ড এটা ভাবতেই মাঝে
মাঝে আমার ভীষণ অবাক লাগে!!(নয়ন)
--আরে ওয়েইট... ওয়েইট..ওয়েইট... কি হয়েছে? ?
তোদের দুইজনের কথার আগা মাথ কিচ্ছু'ই আমি
ভালো করে বুঝতেছিনা ।আর নয়ন তুই যেন
কি'সের পূন্যের কথা বলছিলি...??সেইটা আগে
বল ..(আবির)
.
---বলতে'ছিলাম যে আমাদের মহারাজ হৃদয়
সাহেব একটা বিরাট বড় পুণ্যের কাজ সেরে
এসেছেন।(নয়ন)
-
--পূণ্যের কাজ??হ্যা রে হৃদয় নতুন করে আবার কোন
পূণ্যের কাজ করে এলি তুই??আর নয়ন বেটা
তোকে এভাবে ভেটকি দিয়ে কথাগুলো বলছে
কেন?(আবির)
-
(হৃদয় চেয়ারে বসে চুপচাপ কথাগুলো শুনছে
কারো কোনো উত্তর দিচ্ছেনা)
-
( এটা দেখে আবির হৃদয়'কে আবারো প্রশ্ন
জিজ্ঞেস করলো)
--কি রে বল..এভাবে চুপ করে বসে আছিস
কেন????
--আরে ও আর কি বলবে?আমিই বলছি তুই মন দিয়ে
শোন!!!(নয়ন)
--আচ্ছা ঠিক আছে বল!! তোর মুখেই শুনি!(আবির)
.
---তার আগে বল আমাদের সেমিস্টার এক্সাম
কবে?(নয়ন)
---কেন চার'দিন পর!(আবির)
---আর এক্সাম ফি কবে জমা দিতে হবে ?
---আজকেই লাস্ট ডেট মনে হয়।কিন্তু হঠাৎ করে
এখানে এ কথা উঠছে কেন??আমরা সবাই তো
যার যার এক্সাম ফি অলরেডি দিয়ে দিছি।
---আরে আবির তুই কথা বুঝতেছিস না।মূল সমস্যা
তো এ'খানেই।
---মানে??
---মানে হলো-আমরা সবাই নিজেদের'টা
দিয়ে দিছি কিন্তু একজন এখনো দেয়নি!
---কে দেয়নি?
---যে এখানে চুপচাপ হয়ে বসে আছে সে। (নয়ন
হৃদয়ের দিকে আঙ্গুল দিয়ে কথাটা বলল)
-
---তার মানে হৃদয় তুইই?? তুই এখনো তোর
সেমিস্টার ফি দিসনি??কাল রাতেই না তোর
হাতে সেমিস্টার সব টাকা দেখলাম....নাচতে
নাচতে বলছিলি আজকে জমা দিয়ে দিবি।
তাহলে এখনো জমা দিসনি কেন???তোর কি
এক্সাম দেয়ার ইচ্ছে-টিচ্ছে নেই নাকি??চল চল
এখনি উঠ!! আমি আর নয়ন তোর সাথে গিয়ে
টাকাটা জমা দিয়ে আসি আয়...(বলে হৃদয়ের
হাত টান দিয়ে উঠে দাড়ায় আবির)
.
---আরে পুরোটা তো শুন......!(নয়ন)
---কেন আরো কিছু বলার বাকি আছে নাকি???
---হুম...তুই যে বলছিস এক্সাম ফি জমা দেয়ার
কথা...আরে ও টাকা জমা দিবে কিভাবে?ওর
কাছে টাকা থাকলে তো...!
---মানে??
---মানে হৃদয় ওর সেমিস্টার এর সব টাকা কাকে
যেন দান করে দিছে!
---হোয়াটটটটটট...!কি বলিস....!( অবাক হয়ে
হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে)...."এই গাধা, তুই কি
মানুষ নাকি অন্যকিছু? আর কয়েকদিন বাদে তোর
-আমার নয়নের সামনে এক্সাম আর তুই কোন
সেন্সে এই কাজটা করলি... সব গুলো টাকা
চেনা নেই জানা নেই অচেনা আজানা একটা
লোককে দিয়ে চলে এলি?!!চল কাকে
দিয়েছিস তার কাছ থেকে সব টাকা এক্ষণি
ফেরত নিয়ে আসবো ।এই নয়ন তুইও চল আমার
সাথে.....
.
এবার হৃদয়ের মুখ থেকে কথা ফুটলো.."না"
--না মানে??(আবির)
--আমি তোদের সাথে টাকা ফেরত নিতে
আসবোনা।
--এই বলদ!! আমাদের সামনে এক্সাম,আডমিট না
নিলে এক্সাম দিবি কিভাবে??আর এক্সাম না
দিলে পাশ করবি কিভাবে??মাথার সব তার
কি অকালে ছিড়ে গেল নাকি তোর হ্যা??
---না। আমি সুস্থ মস্তিস্কেই বলছি.. আমি টাকা
ফেরত নিতে যাবোনা....আর পুরো ঘটনাটা
তোরা জানিস'না।আগে শুন...তারপর ডিসিশন
নে আমার টাকাগুলো ফেরত চাওয়া উচিত কি
না..!(হৃদয়)
--ঘটনা? কি ঘটনা বল...(নয়ন -আবির একসাথে
বলে উঠলো)
.
তাহলে শুন....
গতকাল রাতে আব্বু এসে আমাকে খামে করে
টাকাগুলো দিয়ে চলে গেল সেটা'তো
তোরা দেখেই'ছিলি।তো এরপর, আজ সকালে
আমি রেডি হয়ে টাকাগুলো জমা দেবার
উদ্দেশ্যে ভার্সিটির দিকে রওনা দেই।পথ
দিয়ে হেটেই যাচ্ছিলাম কিন্তু হুট করে একটা
বিষয় চোখে পড়লো।
.
আমাদের চার রাস্তার যে মোড় আছেনা?সেই
মোড়ের একদম ঠিক বিপরীত পাশে বাসস্টপের
সামনে নীল ড্রেস পরা একটা মেয়ে পাশে
ছোট্ট আরেকটা মেয়েকে সাথে করে
কাগজের মতো কিছু একটা হাতে নিয়ে
দাঁড়িয়ে আছে।আর তোরা তো জানিসই, আমার
আবার সব কিছু ঘেটে দেখার একটা বাজে
অভ্যাস আছে।তাই রাস্তা পার হয়ে গিয়ে
সোজা বাসস্টপ'টার সামনে এসে দাঁড়ালাম।
কিন্তু কাছে এসে দেখি ও'টা কোনো কাগজ
ছিলোনা। পোস্টার টাইপের কিছু একটা
ছিলো,
.
যেটাতে লিখা ...........
" পাশে দাঁড়ানো ছোট্ট মেয়েটার মা
দীর্ঘদিন যাবৎ গুরুতর একটা রোগে আক্রান্ত হয়ে
মেডিকেলে চিকিৎসাধীন"রত অবস্থায়
আছেন।আজকে তার অপারেশন।অপারেশন এর জন্য
বড় অ্যামাউন্টের টাকা প্রয়োজন। যে যা
পারেন সাধ্যমতো সাহায্য করে যান।আমরা
সবাই মিলে যদি মেয়েটাকে একটু আর্থিক
ভাবে সাপোর্ট করি তাহলে হয়তো আজ
মেয়েটির মা সুস্থ হয়ে উঠবে।তাই সবার কাছে
অনুরোধ মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে সবাই
যে যে যার যার মতো করে ডোনেট করে যান।
.
লিখা গুলো পড়ে বাচ্চা মেয়েটার চেহারার
দিকে একবার তাকালাম।চোখে মুখে
বিষণ্ণতার ছাপ নিয়ে রাস্তায় যাওয়া-আসা
কারী মানুষ গুলোর দিকে করুন চাহনী দিয়ে
তাকিয়ে আছে....মুখটা শুকনো। মনে হয় এখনো
কিছু খায়নি । আর পাশের নীল ড্রেস পড়া
মেয়েটা কপালে চুমু দিয়ে বাচ্চাটাকে
সান্তনা দিয়ে বলছে..."কিচ্ছু হবেনা মামণী!
তোমার আম্মু খুব তাড়াতাড়ি ঠিক হবে যাবে।
টেনশন করো'না কেমন?
.
এটা দেখে ছোট্ট মেয়েটার জন্য মনের ভীতরে
কেন যেন একটা খারাপ লাগা ব্যাপারটা কাজ
করছিলো।আমি সেই নীল ড্রেস পড়া
মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম."মেয়েটার
মায়ের কি হয়েছে?
.
"মেয়েটি আমাকে ফার্স্ট টু লাস্ট পুরো
ব্যাপারটা খুলে বললো,এবং এটাও বলল
যে..."তার বান্ধবীরা মিলে সবাই যখন এই
রাস্তাটা দিয়ে ঘুরতে যাচ্ছিলো সেই সময়
বাচ্চাটাকে বাসস্টপের সামনে থালা হাতে
একা ভিক্ষা করতে দেখে এবং কাছে গিয়ে
জিজ্ঞেস করাতে সম্পূর্ণ ঘটনা বাচ্চার কাছ
থেকে জানতে পারে।তারপর বিন্দুমাত্র
দেরি না করে তারা সবাই মিলে লেগে পড়ে
মেয়েটার মায়ের অপারেশন এর জন্য টাকা
কালেক্ট করতে।
.
মেয়েটা আরো বলতে থাকে--"বারো'জন
ফ্রেন্ড এর সবাই ইতিমধ্যে এদিক ওদিকে
সাহায্য প্রার্থনার জন্য ছোটাছুটি করছে এবং
আর অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা সবাই এখানে
এই বাসস্টপে এসে হাজির হবে।তারপর কালেক্ট
করা টাকা নিয়ে সোজা মেডিকেলে যাবে
জমা দিতে।
.
আমি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থেকে মেয়েটার কথা
শুধু শুনলাম।মেয়ে মানুষ হয়েও তারা কত ভালো
উদ্যোগ নিয়েছে। এদিকে আমি আমার
সেমিস্টার ফি জমা দেয়ার কথা অলরেডি
প্রায় ভুলেই গেছি।আর মনে'ই বা থাকবে কি
করে?সব ফোকাস তো মেয়েটার কথার উপর
দিয়ে রেখেছি।
একটু পর একদল মেয়ে এসে আমার সামনে হাজির
হলো। বুঝতে পারলাম এরাই মেয়েটার বান্ধবী
। একে একে সবাই সবার ডোনেশন মেয়েটাকে
দিলো।কিন্তু টাকা হিসাব করার সময় তাদের
কালো মুখ করা চেহারাগুলো স্পষ্ট বলে
দিচ্ছিলো.." পর্যাপ্ত ডোনেশন উঠেনি।আরো
লাগবে।"
.
আর এদিকে আমি ছোট্ট মেয়েটার মুখের দিকে
তাকিয়ে থেকে মনে মনে চিন্তা করতে
লাগলাম,..."আরে আমার কাছেও তো টাকা
আছে।মোটামোটি ভালো অংকের টাকা।
মানছি এটা আমার এক্সামের জন্য।কিন্তু আমি
যদি আজ কে আমার এই টাকাগুলো মেয়েটার
মায়ের অপারেশনের জন্য দিয়ে দেই তাহলে
প্রকৃত অর্থে আমি মানুষ হিসেবে সার্থক হবো।
আর একজন মানুষের জীবন বাচানোর চেয়ে উত্তম
কোনো কাজ এ জগতে নেই।জানি এতে আমার
পড়াশোনার একটু ক্ষতি হয়ে যাবে কিন্তু
তাতে কি??এক্সাম আজ না হয় কাল ঠিকই দেয়া
যাবে।কিন্তু একটা একটা মানুষ আজ মারা
গেলে তাকে কাল শত চেষ্টা করেও ফিরিয়ে
আনা যাবেনা।
.
যা ভাবা তাই কাজ... আমি টাকার খামটা
পকেট থেকে বের করে ওই মেয়েটির হাতে
ধরিয়ে দিয়ে বললাম...
.
--আপনারা আমার এই টাকাগুলো রাখুন।আশা
করি একটু হলেও আপনাদের কাজে দিবে।
(খাম টা খুলে ভীতরের টাকাগুলো দেখার পর
মেয়েটা ও তার বান্ধবী'রা বেশ অবাক হয়ে
একজন আরেক"জনের মুখের দিকে তাকাতে
লাগলো এবং আমাকে "ভাইয়া "সম্বোধন করে
বলে উঠলো)
--এ তো অনেক টাকা!!আপনি কি সত্যি সত্যি'ই
এতোগুলো টাকা আমাদের ফান্ডে দিয়ে
দিচ্ছেন ভাইয়া???
--হ্যা। কেন কোনো সন্দেহ আছে এতে?
--না না।কোনো সন্দেহ নেই।বাট. ..সত্যি বলতে
আপনাকে দেখে আমাদের মতন'ই স্টুডেন্ট বলে
মনে হচ্ছে। আর একজন স্টুডেন্ট এর কাছে
এতোগুলো টাকা থাকাটা?? ব্যাপারটা
আসলে আমাদের কারোর'ই মাথার ভীতরে
ঢুকছেনা।
--আপনারা যেটা ভাবছেন ঠিকই ভাবছেন।
আমি আপনাদের মতোই স্টুডেন্ট। আর এই
টাকাগুলো আমার নিজের না ... এগুলো আমার
সামনের সেমিস্টার ফি'র টাকা।
---তার মানে ভাইয়া ??আপনি আপনার
সে..মি..~~~~~~(আর কিছু বলার আগেই আমি
তাদের থামিয়ে দিয়ে বললাম)
---হুম! এটা আমার পরিক্ষার টাকা।
---উই আর রিয়েলি সরি,ভাইয়া!!...আপনার এই
টাকাগুলো আমরা কিছুতেই আপনার কাছ থেকে
নিতে পারবোনা।কারণ-কারো লোকসান করে
কোনো সাহায্য চাওয়া বা নেওয়া একপ্রকার
অন্যায়।
---কেন নিবেন না??আমি তো এটা স্ব-ইচ্ছায়
দিচ্ছি।আর নিজ ইচ্ছায় কারো কোনো হেল্প
করলে সেটা অন্যায় না বরং আত্নতৃপ্তি
বুঝলেন?? আপনারা রাখুনতো!!...
---তাহলে আপনার এক্সামের কি হবে??
--সেটা তো চলমান,আজ আসবে কাল যাবে।
একটা পরিক্ষা না দিলে তেমন কিছু ই হবেনা।
আপনারা নিশ্চিতে টাকাগুলো রাখুন।আর
টাকাগুলো রাখলে আমি ব্যক্তিগত ভাবে
অনেক খুব খুশি হবো।
(অত:পর ওনারা সবাই আমার সাথে আর কোনো
তর্কা-তর্কিতে না জড়িয়ে চুপচাপ খামটা
নিজেদের কাছে রেখে দিলো)
.
"এখন তাহলে আমি আসি!আল্লাহ চাইলে
আপনাদের সাথে আমার আবার দেখা হবে!
ভালো থাকবেন!"~~~কথাটা বলে উল্টো পথে
হাটা শুরু করতেই যাবো কিন্তু ঠিক তখনি পিছন
থেকে নীল ড্রেস পড়া সেই মেয়েটা আমাকে
ডেকে বসলো....
---এক্সকিউজ মি মিস্টার...!একটু দাড়ান..!
(আওয়াজ টা শুনে পিছনে ফিরে দাড়ালাম।
মেয়েটি আমার কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো)
---কোন ভার্সিটি তে পড়েন?
(নাম বলে দিলাম)
---কোন বর্ষ??
(সেটাও বলে দিলাম)
---আর আপনার রোল কত??(নিঃসংকোচ আবেদন)
(সব যেহেতু বলেই দিয়েছি এটা বাদ রেখে কি
লাভ??এটাও বলে দিলাম)
---থ্যাংকস!! এবার আপনি যেতে
পারেন....বাই.!
---আপনি আমার থেকে এগুলো জানতে
চাইলেন কেন??(পাল্টা প্রশ্ন করলাম)
---এমনি জানতে চাইলাম.... ভালো থাকবেন।
বাইইই...(হাত দিয়ে ইশারা করে)
-
(কি অদ্ভুত...!! এমনি এমনি কি কেউ কিছু জানতে
চায়??যাইহোক আমি আর কিছু বললাম না।
সোঝা উলটো পথে হাটা দিলাম।আর সেখান
থেকে সোঝা এই টং দোকানে চলে আসলাম।
ভেবেছিলাম তোদের সাথে ব্যাপারটা
শেয়ার করলে আমাকে বাহবা দিবি কিন্তু
তোরাতো খুত ধরে মনে যা পাচ্ছিস আমাকে
সেটাই বলছিস??)~~~[অন্যদিকে অভিমানী মুখ
করে হৃদয় বলল]
.
আবির আর নয়ন এক আরেকজনের মুখের দিকে
তাকিয়ে নিজেদের ভূল উপলব্ধি করলো।
(অত:পর ও'রা দুজন পিছন থেকে হৃদয়ের দুই কাধে দুই
হাত রেখে বলল)
-
--দোস্ত!সরি রে....আমরা আসলে বুঝতে
পারিনি যে এসব কিছুর ভীতরে এই ঘটনাটা
ছিলো।রিয়েলি সরি...
--থাক থাক আর সরি বলা লাগবেনা।এহহহ...
আসছে আমাকে সরি বলতে।(অভিমানের সুরে)
--দোস্ত রাগ করিসনা!! এই দেখ কান ধরে সরি
বলছি!
--কান-টান ধরা লাগবেনা।এখন তোরা
আমাকে এক কাপ চা খাওয়া তাহলেই হবে।আর
হ্যা বিলটা তোরাই দিবি।
---এই ব্যাপার??মামা ও'রে এক কাপ খাটি গরুর
দুধের চা বানায়া দেনতো।(নয়ন)
.
অত:পর হৃদয় -আবির-নয়ন তিনজন মিলে চেয়ারে
বসে হাসতে হাসতে আড্ডা দিতে লাগলো।
ঠিক তখনি হৃদয়ের ফোনে অপরিচিত একটা কল
বেজে উঠলো.......
হৃদয় একটা সাইডে এসে কল টা রিসিভ করে
বললো.......
---হ্যালো..!
--হ্যালো মিস্টার!!কেমন আছেন?(ওপাশ থেকে)
--হুম ভালো!কিন্তু কে বলছেন?
--আমি হিয়া বলছি।
--হিয়া? এ নামের কাউকে তো আমি চিনিনা
ম্যাম।আপনি মেইবি রং নাম্বারে কল
দিয়েছেন।
--নাহ,হৃদয় সাহেব সঠিক নাম্বারে এবং সঠিক
মানুষ টার কাছেই আমার কল টা গিয়েছে।
--আপনি আমার নাম জানলেন কিভাবে??
.
--কে আমি?আপনার নাম জানলাম কিভাবে? এ
টাইপের প্রশ্ন করে সময়টা পার করবোনা।আসল
কথায় আসি--আজকের নীল ড্রেস পরা
মেয়েটার কথা আপনার মনে আছে??যার কাছে
আপনি আপনার সেমিস্টার ফির টাকা গুলো
দিয়ে দিয়েছিলেন একটা বাচ্চা মেয়ের
মায়ের অপারেশনের জন্য???
-
---হুম,মনে আছে।ওয়েইট....তার মানে আপনিই কি
সেই মেয়ে??কি আশ্চর্য... আপনি আমার নাম্বার
কোথায় পেয়েছেন???আপনাকে তো আমি
কোনো নাম্বার দেইনি।
---সেটা না হয় পরে একসময় বলবো!!আর যাইহোক
এখন আমি যে আপনাকে কলটা দিয়েছি তার
কারণ ৩টি।
---বলে ফেলুন......
---প্রথমত →আপনাকে আর টেনশন করতে হবেনা।
আপনার সেমিস্টার ফির টাকা আমি জমা
দিয়ে দিয়েছি।দ্বিতীয়ত → আপনার সব
ডিটেইলস আমি আপনার ভার্সিটি থেকে
জোগাড় করেছি।তাই ফোন নাম্বার পাওয়া
আমার কাছে কোনো কঠিন কিছুনা।আর তৃতীয়ত
এবং সবশেষে →এই নাম্বারটা আজ এই মুহূর্ত
থেকে সারাজীবন খোলা রাখবেন এবং সব
সময় সবার হেল্প করবেন।
[সব কথা হৃদয়ের মাথার উপর দিয়ে চলে গেলো।
এতক্ষন ফোনে কি হলো? এগুলা কি সত্যি
ছিলো নাকি??]
--আচ্ছা আচ্ছা।(ঘোরের মধ্যে থেকে হৃদয় উত্তর
দিলো)
--হুম।তাহলে ভালো থাকবেন!আমি সময় সময়ে
আপনাকে ফোন দিবো ~~~(বলে হিয়া কল টা
কেটে দিলো)
.
অত:পর হৃদয় কি মনে করে মনে মনে একটা মুচকি
হাসি দিয়ে ওর ফোনটা পকেটে রেখে
দিলো এবং এসে পুনরায় ওদের আড্ডা জমিয়ে
আরম্ভ করলো। সাথে আরিফ মামার মাসালা
চা তো আছেই....!!

কোন মন্তব্য নেই