Breaking News

পিরিয়ড নিয়ে কিছু পিশাচের পৈশাচিক আনন্দের খোড়াক হয় শুধু মেয়েরাই

পিরিয়ড নিয়ে কিছু পিশাচের পৈশাচিক আনন্দের খোড়াক হয় শুধু মেয়েরাই...
- মাম্মা দেখ, তোর গার্লফ্রেন্ডের মাসিক হইসে, সেলোয়ার লাল!
- আনিলা, তোকে ফার্মেসি থেকে কী জানি কিনতে দেখলাম? দেখি দোস্ত, ব্যাগ দেখি! কি কিনেছিস? আচ্ছা এত খাটাশ কেন আমরা?

স্কুলে লেফট রাইট হচ্ছে। হঠাৎ মেয়েটি টের পায় কিছু একটা ঘটে যাচ্ছে। এই বিব্রতকর অবস্থাটি মাত্রা ছাড়িয়ে যায় তখনি যখন সে দেখে তার সাদা কামিজের উপর থেকেই রক্ত দেখা যাচ্ছে!
.
মেয়েটার বয়স ১৩। প্রথম নোয়াখালি যাচ্ছে, পরনে সাদা লং স্কার্ট। হঠাৎ সে টের পায় কিছু একটা ঘটে যাচ্ছে। মাকে বলতে না পেরেও সে চুপ
করে থাকে। ভয়ে আতংকে একসময় মা বুঝে ফেলে তার ওড়না দিয়ে মেয়েকে জড়িয়ে রাখে। এই ঘটনা মনে পড়লে মেয়েটির এখনো গা শিউরে ওঠে।
.
একটা মেয়ের কতটা ধৈর্য থাকলে এসব পরিস্থিতি সামাল দিতে পারে ভাবতে পারেন? কাউকে কিছু না জানিয়ে নিজে নিজে সহ্য করার এক অদ্ভুত ক্ষমতা নিয়ে জন্মায় এরা। প্রতিটা মেয়ের জীবনে পিরিয়ডের প্রথম সময়ের এরকম অসংখ্য ঘটনা থাকে
.
বাসায় কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন হলে মেয়েটি প্রথমে আগ্রহ নিয়ে তারিখ জানতে চায়। যদি সে তারিখ তার পিরিয়ডের সাথে মিলে যায় মনের
কষ্টটা তখন মুখে ফুটে উঠে।
.
পেটের ব্যথা আর অসহ্য কষ্ট নিয়ে একটা মেয়েকে ভার্সিটির শিক্ষা সফরে যাওয়ার শখ বাতিল করতে হয়। বন্ধুরা যখন ফুচকা খায় সে তখন পেটে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে বাসায় চলে আসে। রিক্সাটা যখন ভাংগা রাস্তার উপর দিয়ে যায় মেয়েটা তখন এক হাত দিয়ে সিটের নিচটা চেপে ধরে রাখে।
.
এত কিছু শুনেও অমানুষ না হলে মেয়েদের অসম্মান করাটা কঠিন ব্যাপার। মানসিক দিক দিয়ে কেউই নারী হয়ে জন্ম নেয় না - অজস্র লজ্জা, অজস্র বিব্রতবোধ আর সংকীর্ণতা দিয়ে আমরা একটা মানুষকে নারী বানিয়ে ফেলি।
.
কিন্তু একটি জিনিস মাঝে মাঝে আমাকে খুব লজ্জায় ফেলে দেয়। ফার্মেসিতে ভিড়ের মাঝে এক গাঁদা পুরুষের সামনে একটি মেয়ে স্পষ্ট গলায় বলতে পারে না - সে ন্যাপকিন কিনতে এসেছে। সে অপেক্ষা করে, কখন মানুষ কমবে।
.
দোকানদার (সবাই না) যখন জানে সে এই জিনিস কিনতে এসেছে তখন কেমন করে যেন তাকায়! কীভাবে যেন শুয়োরের মত করে হাসে! তখন তাকে জানোয়ারের মত দেখায়! তাকে দেখে মনে হয় সে সৃষ্টির সেরা জীব আশরাফুল মাখলুকাত না, সে একটা বুনো শুয়োর।
.
ঋতুস্রাবের মত সাধারণ একটি বিষয়কে আমরা খুব নিষিদ্ধ মনে করি। আচ্ছা রমজান মাসে রোজা না রেখেও কেন একটা মেয়েকে সাহরী খেতে হবে? কেনো
তাকে দেখে বুঝা গেলেও বার বার জিজ্ঞাসা করতে হবে রোজা রেখেছ কিনা? আমি জানি, রোজা রাখতে না পেরেও সারাদিন না খেয়ে থাকে এরকম মেয়ের
সংখ্যা প্রচুর!
.
ছেলেদের পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া কেটে ফেলার মত ঘটনা হয় উৎসবের! আর একটি মেয়ে সন্তান জন্ম দেবার অংশবিশেষ ঋতুস্রাবের মত ঘটনার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে - সেটি হয় গোপন লজ্জাজনক!
.
একটা মেয়েকে সাহায্য করা মানে একটা পুরুষ জন্ম হওয়ার সু্যোগ করে দেয়া। তার মানে একটা নারীকে সম্মান করা কি পুরুষকে ভালোবাসা না? এটাই আপনারা কোনোদিন বুঝবেন না!
.
তবুও মেয়েদের চলতে হয়। বাসে চেপে রিক্সায় চড়ে। কিন্তু আমাদের হাত যেনো তাদের ছোঁয়ার অপেক্ষায় থাকে। এই একটা হাতের ভয়ে মেয়েরা ১২ হাত কাপড় পরে রাস্তায় নেমে মাথা নিচু করে হাঁটে।
.
মন থেকে মানুষ হয়ে উঠুন। নারীদের সম্মান করুন। যে নারীর পেটে স্বর্গ, পায়ের নীচে স্বর্গ, যে নারীকে বৈধ উপায়ে ভোগ করে স্বর্গীয় অনুভুতি লাভ করেন... সে নারীকে মসজিদের মত পবিত্র রাখুন..............

কোন মন্তব্য নেই